বইঃ দ্য আলকেমিস্ট
লেখকঃ পাওলো কোয়েলহো
প্রথমেই একটা মুভির ডায়লগ দিয়ে শুরু করা যাক! ” আগার তুম কিসি চিজকো দিলসে চাহো,পুরি কায়নাত তুমহে উছে মিলানিকি ছাজিস মে লাগযাতাহে” এটি মুলত পাওলো কোয়েলহো এর বিখ্যাত একটি উক্তি।
দ্য আলকেমিস্ট রিভিউ কাহিনী সংক্ষেপঃ
মূলত বইটি রচিত হয়েছে একজন বইপ্রেমী, ভ্রমণপিপাসু মেষপালক ছেলের স্বপ্ন পূরণের যাত্রা নিয়ে। ছেলেটির নাম সান্তিয়াগো। গল্পের শুরুতেই বর্ণিত আছে মেষপালকের অতি সাধারণ জীবন যাপনের কথা। তার এই সাধারণ জীবন অসাধারণ হয়ে ওঠে একটি স্বপ্ন দেখার পর। সে স্বপ্নে দেখে সুদূর মিশরে তার জন্য অপেক্ষা করছে গুপ্তধন। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানার পর সে গুপ্তধনের সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু তার পৃথিবী ভ্রমণের ইচ্ছা ছিলো তাই সে আর বিলম্ব না করে বেরিয়ে পড়ে
স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। এমন সময় তার পরিচয় হয় নিজেকে সালেমের রাজা দাবী করা এক বৃদ্ধের সাথে যে তাকে হুরিম এবং থুমিম নামক দুটি অমূল্য পাথর দেন। ভেড়ার পাল বিক্রি করে স্বপ্নের পথে যাত্রা করার পরপরই সে ছিনতাইয়ের সম্মুখীন হয় এবং নিজের সব সম্পদ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু তাই বলে সে নিজের লক্ষ্য থেকে সরে যায় না। সান্তিয়াগোর এই দৃঢ় মনোবলই ছিলো তার সমস্ত যাত্রার সঙ্গী। সমস্ত সম্পদ হারাবার পর সে এক স্ফটিক ব্যবসায়ীর দোকানে কাজ নেয় এবং এখানে তার বুদ্ধিমত্তার কারণে সেই দোকানদারও উপকৃত হন। অনেকদিন সেখানে কাজ করে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে সে আবার নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রায় তাকে পাড়ি দিতে হয় দুর্গম সাহারা মরুভূমি। প্রকৃতির ইশারায় এবং নিজের বুদ্ধির সাহায্যে সান্তিয়াগো সাহায্য করে মরুদ্দ্যানে থাকা মানুষদের। এখানে সে তার ভালোবাসার দেখা পায়। ফাতিমা নামক একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে সে। এই অবস্থায় সে তার স্বপ্ন এবং ভালোবাসার মধ্যে একটা অদ্ভুত দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু ফাতিমা তাকে আশ্বস্ত করে যে ভালোবাসা কখনোই স্বপ্ন পূরনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এখানেই তার পরিচয় হয় আলকেমিস্ট নামক একজন লোকের সঙ্গে।
অ্যালকেমিস্ট হলো এমন এক রহস্যময় ব্যক্তি যে লোহাকে স্বর্ণে রূপান্তর করতে পারে। আলকেমিস্ট সান্তিয়াগো কে স্বপ্ন পূরনের পথ দেখায়। এবং পথের মধ্যে নানা ধরনের প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও সমস্তটার মোকাবিলা করে সান্তিয়াগো সেই পিরামিডের দেশ মিশরে গিয়ে হাজির হয়।
কিন্তু পিরামিডে সে গুপ্তধন খুজে পায়নি।
তারপর কী হয়েছিলো?
সে কোথায় গুপ্তধন পেয়েছিলো তাহলে?
তা জানতে নিজেই বইটা পড়ে ফেলুন একবার।
পর্যালোচনা– গল্পটির মুল আকর্ষণ ‘গুপ্তধন’ হলেও পথিমধ্যে হওয়া ঘটনা থেকে পাওয়া লাইফ লেসনই গল্লটিকে অমর করে তুলেছে।
গল্পটিতে ধর্ম, নৈতিকতা আর দর্শনের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে যা নিঃসন্দেহে পাঠককে অনুপ্রাণিত করবে।
বইটার মেইন উক্তি- যখন তুমি কোনো কিছু মন থেকে পেতে চাইবে পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তোমাকে তা পাইয়ে দেয়ার জন্য ফিসফাস শুরু করবে।
ব্যাক্তিগত মতামত ঃ এ বইটি আমার কাছে যথেষ্ট ভালো লেগেছে,রেটিং দিতে বললে ৯.৫/১০ দিব।
আমার মতে এ বইটা আপনাকে এটা প্রমান করে দেবে যে, বই শুধু আনন্দ – বিনোদনের জন্য নয়, বরং জীবন দর্শন ও জীবন পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও বিরাট ভূমিকা রাখে।