Pdf: খোয়াবনামা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস pdf download

খোয়াবনামা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস pdf book free download – Khowabnama book by Akhtaruzzaman Elias pdf download
এই উপন্যাসের কাহিনী ১৯৪৬ থেকে শুরু হয়েছে। ঘটনার প্রেক্ষাপট টানতে লেখক আরও কয়েক পুরুষ আগে যাওয়ার স্বাধীনটা ব্যবহার করেছেন। বগুড়া জেলার বাঙালি নদীর আশেপাশের কিছু গ্রামের মানুষের কাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা অংশকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। কালাৎহার নামের এক বিল কে কেন্দ্র করে লেখা কাহিনী। এই ভূখণ্ডে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে থাকা মানুষদের যাপিত জীবনের এক ছবি আঁকা হয়েছে এই উপন্যাসে।
পশ্চিমবঙ্গের কথাসাহিত্যিক হাজার চুরাশির মা-এর লেখক মহাশ্বেতা দেবী ‘খোয়াবনামা’র লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন “ইলিয়াসের পায়ের নখের তুল্য কিছু লিখতে পারলেও আমি ধন্য হতাম”।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের লেখা উপন্যাসের সংখ্যা মাত্র দুইটি। এই দুই উপন্যাস দিয়েই বাংলা কথাসাহিত্যে নিজের অমরত্ব নিশ্চিত করেছেন তিনি।
গত ৭ বছরে তিনশাে,চারশাে নাকি তারও বেশি।
গল্প-উপন্যাসের বই শেষ করার পর, জনা বিশেক লেখকের
সাথে বাংলার আনাচেকানাচে হেঁটে বেড়ানাের পর, আমারে
থামতে হবে কাৎলাহার বিলের পাকুড় তলাতে!
যেখানে মুন্সি গজার চড়িয়ে ভেড়ার রূপ দেয় প্রতি রাতে।
চেরাগ আলি, তমিজের বাপ, তমিজ আর সখিনা’রা।
জনমের পর জনম যেখানে পায়ের রগ টানটান করে।
দাঁড়িয়ে ভাতের গন্ধে-কাদার গন্ধে-মাছের গন্ধে আধাপেট
ভরার আশাতে মুন্সির উপর আস্থা করে।।
বিভূতিভূষণের ‘আরণ্যক’এর পর মানব প্রেম।
কাহিনী,কিশাের উপন্যাস আর বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর
বাহিরে গিয়ে খুঁজে পাওয়া দারুণ এক মাস্টারপিস এই
বই। গ্রামীণ মিথ যার সাথে দেশ ভাগ, নির্যাতিত চাষী,
মাঝি,সমাজের নীচু স্তরের মানুষের সংগ্রামের বাস্তব চিত্র
বাস্তবিক অর্থেই শােলকে,কাব্যে চোখের সামনে ফুটিয়ে।
তােলতে সক্ষম হয়েছে লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
তার লেখা “খােয়াবনামা” উপন্যাসে।
খোয়াবনামা বইটি নিয়ে বলতে গেলে,,,,কিছুটা শেয়ার করি বইটির,,,,মেলা দিন আগেকার কথা। কাৎলাহার বিলের ধারে ঘন জঙ্গল সাফ করে সোভান ধুমা আবাদ শুরু করে বাঘের ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে। ওইসব দিনের এক বিকালবেলায় মজনু শাহের অগুনতি ফকিরের সঙ্গে মহাস্থান গড়ের দিকে যাবার সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেপাই সর্দার টেলারের গুলিতে মারা পড়ে মুনসি বয়তুল্লা শাহ। কাৎলাহার বিলের দুই ধারের মানুষ সবাই জানে, বিলের উত্তরে পাকুড়গাছে আসন নিয়ে রাতভর বিল শাসন করে মুনসি। দূরে কোথাও ভূমিকম্প হলে যমুনা বদলে যায়। বন্যায় ভেঙে পড়ে কাৎলাহারের তীর। মুনসির নিষ্কণ্টক অসিয়তে চাষীরা হয় কাৎলাহার বিলের মাঝি।
খোয়াবনামার শুরু। বিলের মালিকানা চলে যায় জমিদারের হাতে। মুনসির শোলোকে শোলোকে মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বেড়ায় চেরাগ আলি ফকির। তমিজের বাপ শোলোক শুনে আর ঘুমের মধ্যে বিলে গিয়ে কাদায় পা ডুবিয়ে দেখতে চায় পাকুড়গাছের মুনসিকে। ভবানী পাঠকের সঙ্গে পূর্বপুরুষের জের টেনে বৈকুণ্ঠনাথ গিরি প্রতীক্ষা করে ভবানীর শুভ আবির্ভাবের। তমিজ দেখে জমির স্বপ্ন। আর চেরাগ আলির নাতনি কুলসুম খোয়াভে কার কায়া যে দেখতে চায় তার দিশা পায় না। তেভাগার কবি কেরামত শেষ পর্যন্ত আটকে পড়ে শুধুই নিজের কোটরে; সে নাম চায় বৌ চায় ঘর চায়।
কোম্পানির ওয়ারিশ ব্রিটিশের ডাণ্ডা উঠে আসে দেশি সায়েবদের হাতে। দেশ আর দেশ থাকে না, হয়ে যায় দু’টো রাষ্ট্র। দেশি সায়েবরা নতুন রাষ্ট্রের আইন বানায়, কেউ হয় টাউনবাসী, কেউ হয় কন্ট্রাকটর। আবার নিজদেশে পরবাসী হয় কোটি কোটি মানুষ। হিন্দু জমিদার নায়েব চলে যাওয়ার পরও আজাদ পাকিস্তানে জমি আর বিলের মানুষ নিজেদের মাটি আর পানির পত্তন ফিরে পায় না। পাকুড়্গাছ নাই। মুনসির খোঁজ করতে করতে চোরাবালিতে ডুবে মরে তমিজের বাপ। ভবানী পাঠক আর আসে না। বৈকুণ্ঠ নিহত।
ক্ষমতাবান ভদ্রলোকের বাড়িতে চাকর হয়ে বিল ডাকাতির আসামী তমিজ পুলিসকে এড়ায়। কিন্তু তার কানে আসে কোথায় কোথায় চলছে তেভাগার লড়াই। নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে তমিজ বেরিয়ে পড়ে তেভাগার খোঁজে। ফুলজানের গর্ভে তমিজের ঔরসজাত মেয়ে সখিনাকে নিয়ে ফুলজান ঠাঁই নেয় কোথায়!
খোয়াবনামা সারা। কিন্তু মোষের দিখিরপাড়ে শুকনা খটখটে মাঠের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাৎলাহার বিলের উত্তরে সখিনা দেখতে পায় জ্বলন্ত হেঁসেলে বলকানো ভাত।
খোয়াবনামার জিম্মাদার তমিজের বাপের হাত থেকে খোয়াবনামা একদিন বেহাত হয়ে গিয়েছে। এখন সখিনার খোয়াব। খোয়াবনামা স্বপ্নের ব্যাখ্যাতা। কিন্তু স্বপ্নের ব্যাখ্যায় যা বিবেচ্য তা স্বপ্ন নয়, স্বপ্ন দেখা মানুষ।
Khoabnama pdf Download from google drive link:
Khoabnama pdf Download from mediafire