বিনোদন

Tenet (2020) Bangla Subtitle Download

মুভিঃ Tenet (2020) [HDRip]
রানটাইমঃ ২ঃ২৯ঃ৪৪ ঘন্টা।
আইএমডিবিঃ 7.7/10 (increasing).
রোটেন টমেটোসঃ 71% Fresh.
জনরাঃ Sci-fi, action.
ভাষাঃ English
পরিচালকঃ Christopher Nolan.
শ্রেষ্ঠাংশেঃ John David Washington, Robert Pattinson, Elizabeth Debicki, Dimple Kapadia, Michael Caine & Kenneth brannargh.
বাংলা সাবটাইটেল রিলিজ &’অনুবাদেঃ Queer Bengali

মুভি প্লটঃ

সাধারণ পদার্থের ভাষায় বস্তুর মধ্যে এনট্রপি বিদ্যমান। এর নির্দিষ্ট মান ও দিকের কারণে চলমান সময়ে পৃথিবীর সকল বস্তু সামনের দিকে ধাবমান। কিন্তু যদি কোনো বস্তুর এনট্রপির দিক সম্পূর্ণে উলটে দেয়া যায়, মান একই থাকে, তবে বস্তুটি সম্পূর্ণ সময়ের উলটো দিকে চলতে শুরু করবে। (নোলানের ধারণা, বাস্তবভিত্তি নেই। ইনসেপশনের স্বপ্নের মতো।) তো ভবিষ্যতের কেউ যদি এনট্রপি উলটে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে, তবে সে টাইম ট্রাভেল করতে পারবে। আর সে যদি চায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে, তাও সম্ভব। TeNeT একটি সংস্থা যারা এই বিশ্বযুদ্ধ থামাতে চায়। আর এই নিয়ে মুভির গল্প সামনে এগোয়।

অনুবাদকের কথাঃ নোলানের মুভি মানেই প্যাচানো কনসেপ্ট। যদিও এই মুভিটা কম প্যাচানো। তবে অনেক ফিজিক্স এবং সায়েন্টিফিক টার্মের জন্য বুঝে ওঠা একটু দুরুহ। তাই আমি আক্ষরিকের থেকে সাবলীল ভাবানুবাদেই বেশি জোড় দিয়েছি। যাতে সকল শ্রেণীর দর্শক বুঝতে পারেন। ধন্যবাদ।

𝗧𝗘𝗡𝗘𝗧 (2020) ইন-ডেপথ রিভিউ:

হেভি *স্পয়লার* ওয়ার্নিং!
জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলানের শেষ মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ‘টেনেট’ প্রায় সবার কাছেই প্রথম প্রথম অবোধ্য মনে হতে পারে। কিন্তু একটু সাবধানে বোঝার চেষ্টা করলে খুবই থ্রিলিং ও মজার একটি একশন সিনেমা। এই লেখায় ‘টেনেট’ এর প্রায় সবদিকগুলো বিশদ আলোচনা করার চেষ্টা করেছি নিজের ব্যাক্তিগত জানাশোনা দিয়ে। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

TENET এর অরিজিনাল কনসেপ্ট ও নামকরণ তাৎপর্যঃ (the History of SATOR square)

নোলানের এই সিনেমার অরিজিনাল কনসেপ্ট নেয়া হয়েছে প্রায় ২০০০ বছরের প্রাচীন একটি প্যালিনড্রমিক বর্গ যা ‘৫×৫ স্যাটর বর্গ’ (Sator Square) নামে পরিচিত। সমগ্র ইউরোপ জুড়ে এই স্যাটর স্কয়ার এর আলামত পাওয়া যায় যা প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী ‘পম্পেই’ তেও পাওয়া যায়। এটি মূলত একটি ৫×৫ বর্ণ বর্গ; যেখানে ৫ টি প্যালিন্ড্রমিক শব্দ পরপর রাখা আছে। প্যালিন্ড্রম হলো এমন ছন্দ যা সোজা করে পড়লে যেমন উল্টো করে পড়লেও তেমন। আর এই স্যাটর স্কয়ার চারদিক দিয়ে পড়লেই একই থাকে- তাই একে চতুর্মাত্রিক প্যালিন্ড্রম বলা হয়। স্যাটর স্কয়ার এর স্বরূপ নিম্নরূপঃ (2nd photo)

S A T O R
A R E P O
T E N E T
O P E R A
R O T A S

এই স্কয়ারটিকে ইউরোপীয়রা জাদুকরী মনে করেন, অনেকে মনে করে এর প্রতিরক্ষামূলক (Protective) গুণ আছে। ঠিক সিনেমাতেও Tenet হলো এমন একটি সংস্থা যা মানবজাতির এক ভয়ানক পরিণতি থেকে রক্ষা করছে বিশ্বকে যা মুভিতে ‘Preventing from 3rd World War’ হিসেবে দেখানো হয়েছে যা মূলত সময় সম্পর্কিত যুদ্ধ বা ‘Temporal warfare’ । আর সমগ্র মুভিজুড়ে নোলান এই বর্গের ৫টি উপাদানকেই চরিত্র ও সিনেমাটিক কম্পোনেন্ট হিসেবে রেখেছেন। আর ঠিক TENET শব্দটির মতই সিনেমার কাহিনীর সূত্রপাত ঠিক যে দিনে হয়, ঠিক সেদিনই কাহিনীর সমাপ্তি হয়। অর্থাৎ সিনেমাটিও একটি প্যালিন্ড্রমিক অর্ডারে সমাপ্ত করা হয়েছে।

নোলানের ফিল্মোগ্রাফিক শৈলীর বিশেষত্ব হলো-
গভীর তাত্ত্বিক দিক ও বিশদ নাট্যক্রিয়া; নোলানের নির্মিত সিনেমাগুলোর যাপিত রস আস্বাদন করতে গেলে আপনাকে দুটি বিষয়ই একসঙ্গে যুগপৎ উপভোগ করতে হবে। ‘গভীর-তাত্ত্বিক’ দিকটা নোলান একেবারে অদ্ভুত বিষয়াদি দিয়ে সাজান। সেসবকে অনেক সময় একচ্যুয়াল সাইন্স না বলে হাইপোথেটিকাল কনসেপ্ট বলাটাই ভাল। কিন্তু মজার বিষয় হলো তাঁর সিনেমার ‘কেন্দ্রীয় তত্ত্ব’ থেকে ফায়দা অর্জন করতে হলে চরিত্রগুলোর ক্রিয়াকর্ম সাধারণ পদার্থবিজ্ঞানের অন্যসব নিয়মকানুন অনুসরণ করেই এগোয়। এজন্য নোলান তাঁর সিনেমায় যখন কোন একশন সিন আনেন সেদিকে আপনাকে তাকিয়ে থাকতেই হবে।

টেনেটে’র টাইম ট্রাভেলের প্রকৃতি ও মেকানিজমঃ
(Don’t try to understand it, feel it)

বর্তমানে টাইম ট্রাভেল খুবই একটি জনপ্রিয় জনরা। তাই বিভিন্ন সিনেমায় এই ব্যাপারটিকে বিভিন্নভাবে দেখানো ও ব্যাখ্যা করা হয়। টেনেট সিনেমায় একটি বিশেষ পদ্ধতির (Turnstile) টাইম ট্রাভেল দেখানো হলেও মূল কিছু ধারণা আগে দেখানো কিছু সিনেমার অরিজিনাল কনসেপ্টের সাথে মিলে যায়। যেমন সময়সম্পর্কিত একটি বিশেষ অনটোলজিকাল বা সত্তাতাত্ত্বিক প্যারাডক্স হলো ‘দি গ্রান্ডফাদার প্যারাডক্স’। যেখানে অতীতে গিয়ে যদি এমন কিছু করা হয় যার ফলে ভবিষ্যতে ইতিমধ্যে থাকা কোন বিষয়ের অস্তিত্বকে সেটা বিনাশ করে ফেলবে। কিন্তু যা মাথায় রাখতে হবে তা হলো যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অর্থাৎ আপনি যদি অতীতে কিছু পরিবর্তন করেন তবে সেটা অতীতে থাকা পর্যবেক্ষকরাw দেখেছে এবং এটাও অতীতেরই একটা ঘটনা। কিন্তু তারপরও আপনি যদি আপনার দাদাকে অতীতে মেরে ফেলেন তাহলে কি আপনার আর জন্ম হবে? এখান থেকে আসে অলটারনেটিভ রিয়েলিটি তত্ত্ব।

এ সকল ব্যাপার টেনেটে একটু সূক্ষ্মভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য একপ্রকার মেকানিজম দিয়ে তা হলো “এলগোরিদম”। যেটা এমন একটি যান্ত্রিক সমন্বয় যা এই ‘গ্র‍্যান্ড-ফাদার প্যারাডক্সকে’ হয়তো উপেক্ষা করে ভবিষ্যতের মানবজাতিকে পৃথিবীর ইনভারশনের মাধ্যমে তাদের জন্য কাঙ্ক্ষিত বসবাসযোগ্য একটি নতুন পৃথিবীতে ঘুরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। একবার চিন্তা করে দেখলে এটা আসলে এমন এক ভয়ানক অস্র যা মানুষের টিকে থাকার অনন্য এক নিষ্ঠুর পদক্ষেপ, যেখানে ভবিষ্যৎ অতীতের বিরুদ্ধে এক কঠিন বিচিত্র যুদ্ধশৈলী গ্রহণ করেছে।
টার্ন্সটাইলঃ ‘Turnstile’ বলতে সাধারণত ঘুরতে পারে এমন দরজা বুঝায়। কিন্তু ‘টেনেট’ এ দেখানো এ যন্ত্রটি হলো এমন একটি মেকানিজম যার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সময় পর্যন্ত রিভার্স এনট্রপি অর্জন করা যায়। এর মাধ্যমে যেমন ট্যাকটিকাল এডভান্টেজ পাওয়া যায় ঠিক তেমন সময়ের উল্টো দিকেও যাওয়া যায়। ট্যাকটিকাল সুবিধাগুলোর একটি হলো ‘টেমপোরাল পিন্সার’ মুভমেন্ট যেটা নিয়ে পরে বলছি।

ইনভার্টেড রিয়ালিটি ও রিভার্স এনট্রপিঃ
(If he can’t have her, no one can)

আমাদের চারপাশে আমরা যেসব ঘটনা পর্যবেক্ষন করি সেসব ঘটনা যে কারণে একদিকে পরিচালিত হয় তার মূল কারণ এনট্রপি। যেমন বরফ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গলে তরল হবে কিংবা গরম বস্তু তার তাপমাত্রা হারিয়ে আরো ঠান্ডা হবে। যদিও থিউরেটিকালি এনট্রপির ধারণা এতটাও সহজ নয়- এনট্রপিকে পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ডিসওর্ডার এর পরিমাণ। বস্তুত এর মাধ্যমে সময়ের ধারা বা প্রাকৃতিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দিককে বুঝানো হয় (Flow of time & nature)। সুতরাং রিভার্স এনট্রপি হলো এমন একটি ধারণা যা সকল পতিক্রিয়া ও তেজস্ক্রিয়তাকে উল্টো দিকে ঘুরাতে পারে মোটকথায় আমরা যেভাবে সময়কে উপলব্ধি করি তার ধারণাই উল্টে ফেলে। তাই আমাদের কাছে আগে কারণ ও পরে প্রভাব যাকে বলা হয় ‘Cause & Effect’, কিন্তু রিভার্স এনট্রপিতে আগে ইফেক্ট ও পরে কাজ হতে দেখা যাবে।

আমরা যদি রিভার্স এনট্রপি প্রাপ্ত কোন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করি আমাদের বাস্তবতায় থেকে তবে তার সবকিছুই আমাদের কাছে উল্টো মনে হবে। আর তাই ইনভার্টেড রিয়ালিটির সকল ঘটনা আমাদের কাছে ঘুরানো। আর যেসব বস্তু ইনভার্টেড বা ‘রিভার্স এনট্রপিপ্রাপ্ত’ সেসব বস্তু সময়ের বিপরীত দিকে প্রবাহিত হবে যাকে ফিল্মে ‘Streaming back’ বলা হয়েছে। সিনেমার এন্টাগনিস্ট বা ভিলেইন এর সাথে ঠিক এই পদ্ধতিতেই ভবিষ্যতে থাকা যুদ্ধ পরিচালকেরা বিভিন্ন বিষয় আদানপ্রদান করে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পেমেন্ট সিস্টেম। স্যাটর একটি গোপন স্থানে তার ‘টাইম-ক্যাপসুল’ পুঁতে রাখে এবং ‘ভবিষ্যতে থাকা ব্যাক্তিবর্গ’ তাকে ইনভার্টেড গোল্ডবার দিয়ে অর্থায়ন করে। এভাবেই গড়ে ওঠে একটি ‘টেম্পোরাল যুদ্ধ’ যেখানে স্যাটর তাঁর নিশ্চিত মৃত্যুকে পুঁজি করে তার নিজস্ব সময়কালের বিপক্ষে হাত মিলায়।

প্রথম থেকে শেষ সকল একশন সিকুয়েন্স এর ব্যাখ্যা (Every action length-scene explained):

১. ওপেনিং সিন – কিয়েভ এর অপেরা হাউজ সিজঃ এই অপারেশনটি মূলত প্লুটোনিয়াম-২৪১ এর ক্যাপচুল এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। কিয়েভ (ইউক্রেনের রাজধানী) অপেরা হাউজের এই অপারেশনে তিনটি পক্ষ থাকে। প্রথমপক্ষ যেটা কোন ‘ছোট ব্যাক্তিগত জঙ্গি সংস্থা’ একদম শুরুতে অপেরা হাউজে সিজ করে ও ভেতরের সবাইকে জিম্মি করতে শুরু করে। তারপর ইউক্রেনিয় সিকিউরিটি ফোর্স ঘটনাস্থলে আসে এবং তাদের ছদ্মবেশে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির একদল সদস্য গোপন মিশনে আসে। সবার একটাই উদ্দেশ্য প্লুটনিয়াম-২৪১ এর রিট্রিভাল। কিন্তু সমস্ত নাটকীয়তার পর পারমাণবিক বোমার ক্যাপসুলটির আকার ও ধরণ নিয়ে সংশয় দেখা দেয় এবং শেষমেষ সেটারও নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যার্থ হয় CIA । এখানে লক্ষণীয় এই মিশনেই প্রথম ইনভার্টেড বুলেট দেখতে পায় কেন্দ্রীয় চরিত্র প্রোটাগনিস্ট, যেটা রীতিমতো অবাক করার মত হলেও সময়ের স্রোতে তখন সেটা আবছা থেকে যায়। অনেক লম্বা সময় তাদের সাথে থাকা রাশিয়ানদের হাতে (যাদের নিয়ন্ত্রক ছিল অন্য আরেক পক্ষ) নির্যাতন ভোগের পর প্রোটাগনিস্ট বিষাক্ত বড়ি দিয়ে আত্মহনন করে যা মূলত পরবর্তীতে তাকে ‘ইনডিউসড কোমায়’ নিয়ে যায়। এ অবস্থায় কিয়েভ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

২. সাঞ্জায় সিং এর সাক্ষাৎঃ মুম্বাইয়ের এক বিশিষ্ট অস্রব্যবসায়ী যেখানে প্রোটাগনিস্ট ইনভার্টেড গোলার রহস্য উদঘাটন করতে আসে। পরবর্তীতে জানা যায় সাঞ্জায় মূলত তার স্ত্রী প্রিয়ারই পাপেট, আসল ফ্রন্ট প্রিয়া সিং। এই প্রিয়া সিং মূলত ‘টেনেট’ সংস্থারই একজন দালাল যা আমরা একটু পরেই জানতে পারি।

৩. ওসলো ফ্রি-পোর্ট অপারেশনঃ ‘ফ্রিপোর্ট’ আর্ট, এনটিকস এসবের করমুক্ত নিরাপদ ব্যবসার জন্য সবচেয়ে ভাল জায়গা। টেনেটে দেখানো ফ্রিপোর্ট গুলোর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ROTAS’ যা মূলত স্যাটরের কোম্পানি। এই অপারেশনের উদ্দেশ্য একটি আর্ট ধ্বংস করে দেয়া যা দিয়ে স্যাটর তার স্ত্রী ক্যাটকে ব্ল্যাকমেইল করত। যার জন্য ফ্রিপোর্টে অগ্নিসংযোগ করা প্রয়োজন ছিল যেটা করা হয়েছিল রানওয়ে থেকে সরাসরি চালিত একটা প্লেন দিয়ে। এর ফলে কোনো ক্রু না মেরে এবং রানওয়েতে সোনার বার ফেলে দিয়ে পূর্বপরিকল্পনা
অনুযায়ী একটা বিস্তৃত ক্রাইমসিন তৈরি করা হয় যা তাৎক্ষণিকভাবে একটি দূর্ঘটনার মত মনে হবে। ফ্রিপোর্টের ভেতরে আগুণ তাড়াতে প্রতিটি নিরবিচ্ছিন্ন কম্পার্টমেন্টে হ্যালাইড গ্যাস রিপ্লেস করা হয়। কিন্তু সবচাইতে ভেতরে থাকা কম্পার্টমেন্টে আগে থেকেই বসানো ট্রান্সটিল থেকে বেরিয়ে আসে পুরো শরীর আবৃত দুই জন লোক। যাদের জন্য এই মিশনের আসল উদ্দেশ্য কম্প্রোমাইজড হয়ে যায়, কিন্তু নতুন উপাত্ত যুক্ত হয়।

৪. প্লুটোনিয়াম-২৪১ মিশনের আদ্যোপান্তঃ
২৪১ এর খোঁজ প্রিয়া সিং প্রোটাগনিস্টকে বলে যাতে করে প্রোটাগনিস্ট আন্দ্রে স্যাটরের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পারে ও মূল মিশনের জন্য দরকারি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারে। এজন্য টালিন শহরে (Estonia) সিকিউরিটি সার্ভিস এর এসকর্ট থেকে Plutonium-২৪১ ছিনিয়ে নিয়ে স্যাটরকে দিতে হত। স্যাটর ও প্রোটাগনিস্টের মাঝে চুক্তি হয় ও স্যাটরের ইয়াটে প্রোটাগনিস্ট দেখে ফেলে স্যাটর কিভাবে ভবিষ্যতের যুদ্ধ পরিচালকদের মাধ্যমে নির্দেশনা ও অর্থায়ন পায়। এ মুহূর্তে স্যাটরের সিকিউরিটি তাকে ধরে ফেলে। ঘটনাচক্রে স্যাটর তাকে অগ্রীম হিসেবে একটি গোল্ডবার দেয় যেটা প্রোটাগনিস্ট ঠিকঠাক না ধরতে পারার ভান করে মাটিতে লাগিয়ে নেয়- যেন স্যাটরের গোপন পোঁতার স্থানগুলো খুঁজে বের করা যায়। কিন্তু তাতে বিশেষ সুফল হয় না।

যথারীতি টালিনে ২৪১ এর নিয়ন্ত্রণ নিতে সফল হয় প্রোটাগনিস্ট পক্ষ। কিন্তু এটা যে প্লুটনিয়াম-২৪১ এর পারমাণবিক অস্ত্রের ক্যাপস্যুল নয় বরং তার চাইতে ভয়ংকর এ ব্যাপারে নীল প্রোটাগনিস্টকে সাবধান করে দেয় যেন কোনভাবে এটা স্যাটরের হাতে না যায়। কিন্তু ‘টেম্পোরাল পিঞ্চার’ এর বদৌলতে (যার মাধ্যমে মূলত স্যাটর তার দলকে ২ টি ভাগে ভাগ করে এক ভাগকে স্বাভাবিক সময়ের তালে সবকিছু পর্যবেক্ষণ ও চিহ্নিত করতে নির্দেশ করে আর তার নেতৃত্বে থাকা অন্য দলকে নিয়ে (ইনভার্টেড টিম) সে আগে থেকেই জানা সব তথ্যের সাহায্যে সহজেই প্রোটাগনিস্টকে আক্রমণ করে এবং ‘প্লুটনিয়াম-২৪১’ (যা মূলত এলগোরিদমের সর্বশেষ অংশ) তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। কিন্তু প্রোটাগনিস্ট ২৪১ এর খালি বাক্স দিয়েছিল স্যাটরকে তাই স্যাটর রিভার্স রানে যাওয়ার আগে ক্যাটকে জিম্মি রেখে তাকে জিজ্ঞাসা করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সে আসলে কোথায় ২৪১ ফেলে আসে। এজন্য ক্যাটকে ইনভার্টেড বুলেট দিয়ে আঘাত করা হয়, কিন্তু প্রোটাগনিস্ট মিথ্যা বলে কারণ সে আগে থেকেই বুঝতে পারে এতে লাভ হবে না। কিন্তু মিথ্যা বলার কারণে স্যাটর যদি ক্যাটকে অতীতে হত্যা করে ফেলে এই ভয়ে প্রোটাগনিস্টও রিভার্সে ফিরে যায়। যেখানে আমরা দেখি সে আসলে কোথায় ২৪১ রেখেছিল(ফায়ারট্রাকেও না, বিএমডব্লিউ তেও না, একটা অডিতে) আর ঠিক সে সময় এই হাত পালটানো স্যাটর দেখে ফেলে।

এর ফলে এন্টাগনিস্ট আন্দ্রে স্যাটর এলগোরিদম এর সব অংশ ভবিষ্যতে পাঠানোর জন্য সংগ্রহ করে ফেলে। এখন শুধুমাত্র ৯ টি অংশকে একইসাথে ভবিষ্যতে থাকা এন্টাগনিস্টদের কাছে পৌঁছে দেয়ার সঠিক সময় ও স্থান নির্বাচন করাই বাকি ছিল।

৫. রিভার্স ক্রোনোলোজি ও শেষ যুদ্ধঃ
ক্যাটকে ইনভার্টেড বুলেট এর মারাত্মক ক্ষতি বা নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বাঁচাতে তাকে ট্রান্সটিলের মাধ্যমে ইনভার্টেড করানো হয় যাতে করে ইনভার্স রেডিয়েশন এর প্রভাব প্রশমিত হয়। কিন্তু ‘টালিন’ ফ্রিপোর্টে স্থানান্তরের পূর্বে ১ সপ্তাহ আগে ট্রান্সটিল ছিল ওসলো পোর্টে। একারণে তাদের ওসলোতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। সিনেমার ঠিক এই সময় থেকে যা যা হয় তার জন্য তাদের আস্তে আস্তে অতীতে ফিরে যেতে হয় (১৪ জুন পর্যন্ত যা বর্তমান সময় থেকে ১৬/১৭ দিনে আগের) ঠিক যেদিন কিয়েভ অপেরা হাউজ সিজ হয়েছিল, যা দিয়ে সিনেমার সূচনা হয়েছিল। এই অংশই হলো রিভার্স ক্রোনোলোজি। এরই মাধ্যমে সম্পূর্ণ সিনেমাকে একটি প্যালিন্ড্রমে রুপান্তর করে নোলান। যখন তারা ওসলোতে আবার রিভার্টেড হয় তখন তারা বুঝতে পারে ওসলো ফ্রিপোর্টের সেন্ট্রাল পেন্টাগনে থাকা ট্রান্সটিল থেকে বেড়িয়ে আসা লোক দুটো আসলে প্রোটাগনিস্ট নিজেই ছিল। পরবর্তীতে আইভসের নেতৃত্বে প্রিয়ার দখলে থাকা ট্রান্সটিলের সাহায্যে ১৪ জুন, যেদিন স্টালসকি-১২ (একটি সোভিয়েত আমলের গোপন শহর) এ বিস্ফোরণের মাধ্যমে স্যাটর এলগোরিদমের সব অংশ ভবিষ্যতে পাঠানোর পরিকল্পনা করে সেদিনে ফিরে যায় ‘টেনেট’ টিম। সেখানে ছিল মূলত একটা নিউক্লিয়ার পরীক্ষার আন্ডারগ্রাউন্ড যার সবচাইতে নিচের অংশকে ‘হাইপোসেন্টার’ বলে। এখানেই স্যাটর এলগোরিদমের সব অংশ পুঁতে রেখে দেয়ার পরিকল্পনা করে ভবিষ্যতে থাকা নিয়ন্ত্রকদের জন্য।

এই অপারেশনের জন্য সমগ্র দলকে ২টি ভাগে ভাগ করা হয়। রেড ও ব্লু টিম। রেড টিম অগ্রগামী। তাদের কাছে সব ঘটনা আমাদের বাস্তবতার মত। আর ব্লু টিম রিভার্স। অর্থাৎ তাদের যাত্রা হবে শেষ থেকে শুরুর দিকে। এটা মূলত একটা বড় ‘টেমপোরাল পিঞ্চার’ অভিযান, যেটা রেড টিম ১০ মিনিটে ও ব্লুটিমও উল্টো ১০ মিনিটে শেষ করবে(Te>n<eT)। রেড টিমের একটা ক্ষুদ্র অংশ ‘ইসপ্লিন্টার ইউনিট’ (২ জন) যাদের দায়িত্ব হলো হাইপোসেন্টার থেকে ‘এলগোরিদম’ বের করে আনা এবং ভবিষ্যতের হাত থেকে এলগোরিদমকে নিরাপদ রাখা। এ মিশনটির সফলতার জন্য ক্যাটকে দেয়া হয় অন্য এক দ্বায়িত্ব। স্যাটরের ফিটনেস ট্র‍্যাকার হলো একটা ডেড-ম্যান সুইচ যার ফলে স্যাটর যদি মারা যায় তবে সাথে সাথে এলগোরিদমের অবস্থান হারিয়ে যাবে। তাই তার মৃত্যুর সময়ের আগে যেন এলগোরিদমকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয় এটাই মূল মিশন। আর একারণেই বর্তমানে থাকা ক্যাটকে অতীতে পাঠানো হয় যেন নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্যাটরের মৃত্যু বিলম্বিত করা যায়।
এই পরিকল্পনায় একমাত্র ব্যাতিক্রম হলো নীল। নীল প্রায় মাঝপথে এসে ব্লুটিম থেকে রিভার্ট হয়ে প্রোটাগনিস্ট ও আইভসকে হাইপোসেন্টারের বিস্ফোরণ থেকে বাঁচায়। কিন্তু এজন্য নীল ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে গিয়ে আরেকটি জাল বুনে আসে। হাইপোসেন্টারে থাকা অবস্থায় ভলকোভের হাতে প্রোটাগনিস্ট ও আইভ আটকা পড়ে সেখান থেকে মূলত নীলই ইনাভার্টেড অবস্থায় তাদেরকে রক্ষা করে নিজের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। আর যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অর্থাৎ অতীতে ফিরে গিয়েই তার মৃত্যু হবে। আইভস আর প্রোটাগনিস্টকে এখন এলগোরিদমের অংশগুলোকে লুকাতে হবে যেন মানবজাতির কেউ আর এ যন্ত্রের সন্ধান না পায়।

সিনেমার শেষে প্রোটাগনিস্ট বুঝতে পারে যে, নীলকে আসলে সেই নিয়োগ দেয় অতীতে ফিরে গিয়ে। আর ‘টেনেট’ মূলত তারই প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা। অর্থাৎ প্রিয়াও তারই দালাল। প্রিয়া ক্যাটকে মেরে ফেলতে চায় (No loose ends) কিন্তু ক্যাটকে এ ব্যাপারে আগে থেকেই সতর্ক করে প্রোটাগনিস্ট যেটাকে সিনেমায় ‘Posterity’ বলা হয়েছে। যার মানে হলো ভবিষ্যতে আসবে এমন কিছু। আমাদের যা কিছু রেকর্ড করা হয় বা ইলেকট্রনিক সংকেতের মাধ্যমে আমরা প্রেরণ করি তার সবি সরাসরি ভবিষ্যতের সাথে সংযুক্ত করে আমাদের।

ম্যাক্স ও নীল কি একই ব্যাক্তি?
এটা একটা জনপ্রিয় মুভি থিওরি হলেও আসলে ম্যাক্স আর নীল একই এটা বলার মত কোন প্রমাণ আসলে নাই। যদি তা হতে হয় তাহলে ম্যাক্সকে (ক্যাটের ছেলে) তার জীবন ইনাভার্টেড হিসেবে কাটাতে হবে। তাদের দুজনের টাইমলাইন আসলেই আলাদা।

‘টেনেট’ সিনেমার টাইম-লুপ ও বুটস্ট্রাপ প্যারাডক্স বা ক্যাজুয়াল লুপ সম্পর্কিত সমস্যাঃ (Is there a problem with the movie?)

টেনেটের পুরো গল্পটাই প্রোটাগনিস্টের একটা টেমপোরাল পিঞ্চার অপারেশন। কিন্তু এ গল্পের আসল অরিজিন পয়েন্ট বা সূচনা কোথায়? বুটস্ট্রাপ প্যারাডক্স (পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় Casual loop) এর নিয়মানুযায়ী এটা এমন একটি ঘটনা যেটার আসল সূচনা কোথায় তা অজানা। টেনেটে নীল ও প্রোটাগনিস্ট এর মিশনগুলোর মূল আইডিয়া কার তা আমরা বলতে পারি না। কিংবা শুধুমাত্র স্যাটরকেই যদি ভবিষ্যতের মানুষ সাহায্য করে তাহলে টেনেট কিভাবে ভবিষ্যতের সাহায্য ছাড়াই শুধুমাত্র প্রোটাগনিস্ট নিজেই তৈরি করল এটাও একটা বড় প্রশ্ন। সমগ্র কাহিনীকে একটু বড় লেন্সে দেখলে কেমন জানি অনেক ছিদ্র থেকেই যায়। কারণ এ জাতীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর মুভিতে দেয়া হয় নি। কিন্তু বুটস্ট্রাপ প্যারাডক্স এর নিয়মানুযায়ী এমনটা হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়।

পরিশেষে, ‘টেনেট’ ক্রিস্টেফার নোলানের সবচাইতে জটিল নির্মিত সিনেমার একটি এবং ‘অরিজিনাল’ কনসেপ্টে নির্মিত পৃথিবীর সবাচাইতে সেরা একশন সিনেমার মধ্যে একটি। এই সিনেমার কনসেপ্ট নিয়ে নোলান এক দশক ধরে চিন্তা করেছেন। আর সবচাইতে কঠিন কাজ যেটা হলো ‘স্ক্রিন-প্লে’ রচনার জন্য তার ৫ বছর সময় লেগে যায়। অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও ধারণা দিয়ে যদি আপনি আপনার মগজ ধোলাই করতে চান তবে অবশ্যই নোলানের কাজগুলো সেরাদের সেরা। ‘TENET’ বস্তুত এমনি একটা প্রোজেক্টের উপসংহার ।।

সাবটাইটেল ডাউনলোড লিংকঃ https://subscene.com/subtitles/tenet/bengali/2346235

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker