Currently set to Index
Currently set to Follow

জীবন যেখানে যেমন free Pdf Download 2021

Jibon Jekhane jemon Pdf free Download by arif azad 2021 :

বইঃ জীবন যেখানে যেমন আরিফ আজাদ 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসঃ

হযরত আবদুন্নাহ ইবনে আব্বাস রোযিঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচাত ভাই । কারণ হযরত আববাস (রাধিঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা আর তিনি হযরত আব্বাসের ছেলে ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় তিনি অত্যন্ত অল্প বয়সের অধিকারী । রাসূল সাল্লান্লীহু’আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতকালে তার বয়স আনুমানিক দশ বছর-ছিল। কিন্তু এত অল্প বয়ফ হওয়া সত্তেও তার জ্ঞানের পরিধি ছিল অনেক ব্যাপক । আর তা এ জন্যে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তার জন্যে দোয়া করেছিলে

“হে আল্লাহ! তাকে পবিত্র কুরআনের এলেম এবং দ্বীনের সমঝ দান করুন ।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতকালে তীর বয়স শুধুমাত্র দশ বৎসর হলেও রাসূলের জামানার সকল বিষয় তীর দিল-দেমাগে বদ্ধমূল অবস্থায় ছিল। অত:পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর তিনি ভাবলেন, রাসূল তো এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন কিন্তু রাসূলের সানিধ্যপ্রাপ্ত অনেক বড় বড় সাহাবা এখনো জীবিত । সুতরাং আমি তাদের.নিকট যেয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণিত হাদীস ভান্ডার অর্জন করব।

 

অতএব তিনি বড় বড় সাহাবার নিকট গমন করতেন এবং এ জন্যে তাকে অনেক সফর করতে হয়েছে এবং কষ্ট-ক্লেশ বরদাশত করতে হয়েছে। এভাবেই তিনি বড় বড় সাহাবায়ে কেরামের নিকট থেকে এলেম অর্জন করেছেন এবং এ স্তরে পৌঁছেছেন যে, আজকে তীকে “ইমামুল মুফাস্সিরীন’ বলে সম্বোধন করা হয়। অর্থাৎ মুফাস্সিরগণের ইমাম । কারণ পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্যে দোয়া করেছিলেন-হে আল্লাহ! তাকে আপনার কালামের এলেম দান করুন”
বর্তমানে তাফসীর বিষয়ে তার চেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত দ্বিতীয় জন নেই। আমি আপনাদের সম্মুখে যে বাক্যটি পাঠ করেছি, সেটা তীরই একটি উক্তি।
পছন্দনীয় ব্যক্তি কে?

উক্তিটি হচ্ছে হযরত আবদুল্রাহ ইবনে আববাস. (রাধিঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করল “আচ্ছা বলুনতো এক ব্যক্তি আমল খুব স্বল্প করে অর্থাৎ নফল ইবাদত, নফল নামায অনেক বেশী পড়ে না, বরং শুধুমাত্র ফরজ ওয়াজিবের উপর আমল করে। অধিক যিকির-আযকার, তাসবীহ্‌-তাহলীল আদায় করে না, তবে সে গোনাহ কম করে । এরূপ ব্যক্তি আপনার নিকট পছন্দনীয়? নাকি এ ব্যক্তি পছন্দনীয় যে অধিক নফল ইবাদত-বন্দেগীও করে আবার অধিক গোনাহও করে। যথা-তাহাজ্জুদ নামায আদায় করে, এশরাক নামায পড়ে, আওয়াবীন নামায পড়ে, তেলাওয়াতও অনেক বেশী করে, তাসবীহ-তাহ্লীল, যিকির আযকার ইত্যাদিও খুব করে, কিন্তু পাশাপাশি গোনাহও অধিক করে। এই দুই ব্যক্তির মধ্যে আপনার নিকট অধিক পছন্দনীয় কে? প্রথম ব্যক্তির আমল কম, গোনাহও কম দ্বিতীয় ব্যক্তির আমলও বেশী গোনাহও বেশী । উত্তরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, গোনাহ
থেকে বাঁচার সমপর্যায়ের আমি আর কিছুকে মনে করি না। অর্থাৎ কোন মানুষ যদি গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে এটা তার জন্যে এত বড় নেয়ামত এবং এত বড় উপকারী যে, এর সমপর্যায়ের অন্য কোন আমল হতে পারে না। যদি এক ব্যক্তি গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে গোনাহ থেকে বাঁচার বিপরীতে কোন নফল ইবাদত মূল্যই রাখে না। মূল বিষয় হচ্ছে গোনাহ থেকে বাচা উল্লেখিত হাদীস দ্বারা এ কথা বুঝানো উদ্দেশ্য যে, যত নফল ইবাদত রয়েছে, তা সবই স্ব স্ব ক্ষেত্রে ফযীলতপূর্ণ। কিন্তু নফল ইবাদতের উপর নির্ভর করে যদি কোন মানুষ মনে করে যে, আমিতো নফল ইবাদত অধিক করি, সুতরাং আমার গোনাহ থেকে বাঁচার প্রয়োজন নেই, তাহলে সে ধৌকায় পতিত হবে। কারণ মূল কথা হচ্ছে মানুষ স্বীয় জীবনে গোনাহ থেকে বীচার চেষ্টা করবে । গোনাহ থেকে বাচার পর যদি ঘটনাক্রমে অধিক নফল ইবাদত করার সুযোগ নাও আসে, তথাপি এর দ্বারা সে তেমন কোন ক্ষতি বা বিপদের সম্মুখিন হবে না। আশা করা যায় সে আল্লাহর দরবারে মুক্তি পেয়ে যাবে। কিন্তু ষদি অধিক পরিমাণে নফল ইবাদত করে এবং পাশাপাশি গোনাহও অধিক করে, তাহলে তার মুক্তির কোন নিশ্চয়তা নেই। কেননা এটা অনেক কঠিন ব্যাপার।

 

গোনাহ ত্যাগের ফিকিরঃ
আজকাল আমাদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যক মানুষের মনেই এই খেয়াল জাগ্রত হয়। কারণ কোন মানুষের মনে দ্বীনের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হলে এবং আন্নাহর পক্ষ থেকে সে তাওফীক হলে, সর্বপ্রথম তার মনে এই ফিকির সৃষ্টি হয় যে, আমাকে কিছু ওযীফা বাতলে দিন, কতিপয় আমল শিখিয়ে দিন, যিকির-আযকারের তরীকা বলে দিন। এবং বলে দিন অধিক নফল ইবাদত কিভাবে করতে হবে, কখন করতে হবে। মোটকথা সে কতিপয় বাহ্যিক আমলের প্রতি উৎসাহিত হয়ে পড়ে । আর সেসব পালন করার পিছনে দিবারাতের সবটুকু সময় ব্যয় করার চেষ্টা করে। কিন্তু এ বিষয়ে ফিকির করে না যে, সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত আমার দ্বারা কতগুলো অহ কি ফ্তিত্ হজ্ছে এবং কতগুলো, আচরণ আন্মাহর মর্জির বিরোধী করে ফেলছি। বিশেষ জ্ঞানী-গুনী এবং কপিতয় দ্বীনদার লোকদেরকেও লক্ষ্য করেছি, তারা নামাযের প্রথম কাতারের পাবন্দী করে। নামাযের জামাত ত্যাগ করে না। কিন্তু তার ঘরে গোনাহের যে হাট বসে আছে তা বন্ধ করার ব্যাপারে তার একটুও মাথা ব্যাথা নেই। বাজারে গেলে তার হাঁলাল-হারামের কোন বাছ-বিচার থাকে না। কথা বলতে গেলে সে গীবত ও মিথ্যা বলার গোনাহে জড়িয়ে পড়ছে, এসব থেকে বাঁচার কোন ফিকির নেই। নিজের ঘরে নাজায়েয এবং অসংখ্য হারাম কাজ হচ্ছে, তা দূর করার চিন্তাও তার আসে না। ফিল্ম এবং অশ্লীল ছবি কাটাচ্ছে; এ দিকে তার ‘কোন ভ্রক্ষেপই নেই। তবে তসবীহ্‌-তাহ্লীল, ওযীফা ও যিকির-আযকারের প্রতি তার খুব মনোযোগ । সুতরাং এরূপ আচরণ কোন অবস্থানেই কাম্য নয়। কারণ এ জাতীয় গোনাহ অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক । এসব থেকে বীচার ফিকির“সর্বদাই করতে হবে।

 

নফল ইবাদত এবং ঞগোনাহের উত্তম দৃষ্টাত্তঃ
এর উদাহরণ এরূপ মনে করুন! যত প্রকার নফল ইবাদত রয়েছে চাই তা নফল নামায হোক, চাই তেলাওয়াত হোক বা যিকির-আযকার ও তসবীহ্‌-তাহ্‌লীল হোক এসবই শক্তি বর্ধক টনিক সাদৃশ্য । এসবের দ্বারা শক্তি অর্জিত হয়। যথা কোন ব্যক্তি শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্যে টনিক সবন করে । আর গোনাহ হচ্ছে বিষতুল্য। এখন কোন ব্যক্তি শক্তি বৃদ্ধির জন্যে টনিকও খেল আবার বিষও পান করল, তাহলে কি টনিক তার উপর কোন ক্রিয়াশীল হবে? বরং বিষ ক্রিয়াশীল হয়ে তাকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করাবে । অপর ব্যক্তি শক্তি বৃদ্ধির জন্যে টনিক সেবন করে না সত্য কিন্তু সে বিষও পান করে না। বরং শুধু ডাল-রুটির উপর জীবন যাপন করে। আর শরীর-্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর বস্তুসমূহ থেকে দূরে থাকে । তাহলে এরপ ব্যক্তি টনিক সেবন করা ব্যতীতও সুস্থ থাকবে । আর প্রথম যে ব্যক্তি টনিকও সেবন করল পাশাপাশি বিষও পান করল, সে নিশ্চিত অসুস্থ হয়ে পড়বে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে । নফল ইবাদত এবং গোনাহের দৃষ্টান্ত ঠিক অনুরূপ । সুতরাং আমাদের এই ফিকির থাকা উচিত যে, সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত আমাদের জীবন থেকে গোনাহ দূর হয়ে যাক। অন্যায় অপরাধ আমাদের দ্বারা সংঘটিত.না হোক। এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হলেই : আমাদের নফল ইবাদতগুলো কাজে আসবে এবং ফলদায়ক হবে।

 

সংশোধনপ্রার্থীদের প্রথম সবক
আজকেতো নিয়ম হচ্ছে কেউ কোন পীরের নিকট গেলে বা কারো সাথে ইসলাহী সম্পর্ক স্থাপন করতে গেলে, পীর সাহেব তাকে সর্বপ্রথম বলে তুমি এই এই আমল করবে, এই পরিমাণ যিকির করবে, এই পরিমাণ তসবীহ-তাহ্লীল আদায় করবে ইত্যাদি। কিন্তু হাকীমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানভী (রাহঃ)-এর নিয়ম ছিল তার নিকট কেউ নিজের সংশোধনের জন্যে এলে তিনি ধিকির আযকার এবং তসবীহ্‌-তাহ্লীলের কথা বলতেন না, বরং সর্বপ্রথম বলতেন. গোনাহ পরিত্যাগ করতে । সুতরাং এ পথের সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হচ্ছেপরিপূর্ণ তাওবা করা । অর্থাৎ সর্বপ্রথম
মানুষ তার জীবনের সকল গোনাহ-থেকে পরিপূর্ণরূপে তাওবা করবে যে, হে আল্লাহ! যেসকল গোনাহ এবং পাপ আমি এ পর্যন্ত করেছি, তা সব. আপনি স্বীয় অনুগ্রহে ক্ষমা করে দিন। আর ভবিষ্যতের জন্যে দৃঢ় শপথ, করছি আর কখনো গোনাহ করব না। অত:পর পরবর্তীতে গোনাহ থেকে বাচার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। শুধু কতিপয় প্রসিদ্ধ গোনাহ থেকে বেঁচে থাকলেই হবে না, বরং সকল প্রকার গোনাহ থেকে বেঁচে থাকত হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা“আলা ইরশাদ করেন
তোমরা প্রকাশ্য এবং প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ করো। এরপর ইরশাদ করেন- নিশ্চয় যারা গোনাহ করছে অতিসত্বর তারা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি
পাবে।

 

বিপদ কেবল বিপদই নয়, আশীর্বাদও
কোনো ব্যক্তি বিপদে নিপতিত হলে এ কথা বলা সঙ্গত নয় যে, এই লোকটি পাপী কিংবা অপরাধী । তার পাপের কারণেই তার ওপর বিপদ আপতিত হয়েছে । মানুষের ওপর অর্পিত এসব বিপদ-যুসিবত, অভিশাপ নয়। কখনো কখনো তা কল্যাণেরও কারণ হয় । আল্লাহ মানুষকে বিপদে ফেলে পরীক্ষা করে দেখেন, তীর বান্দারা বিপদে ধৈর্যধারণ করে কিনা ।
« সূরা ইউনুস, আয়াত ৯৯

ইমানের ওপর অবিচল থাকে কিনা নাকি ইমানহারা হয়ে যায় । মহান আল্লাহ বলেন-_

আমরা তো আল্লাহর জন্যই । আর আমরা সকলে তারই কাছে ফিরে যাবো । তাদের প্রতি বর্ষিত হবে বিশেষ করুণাধারা তাদের
প্রতিপালকের পক্ষ হতে এবং সাধারণ করুণাও । আর এরাই এমন লোক যারা হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছে ”* অপরনআয়াতে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- “বরং নেক কাজ তো এটাংযে, কোনো ব্যক্তি ইমান রাখে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামত দিবসের প্রতি….. আর যারা ধৈর্যধারণ করে অভাব-অনটন, অসুখে-বিসুখে ও যুদ্ধ-জিহাদে | এরাই সত্যিকারের মানুষ, এরাই সত্যিকারের আন্লাহভীরু ৷”?

মহান আল্লাহ আরো বলেন-

“আমি তোমাদের ভালো ও মন্দ দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই
কাছে তোমরা ফিরে আসবে

জীবন যেখানে যেমন আরিফ আজাদ  Pdf Download link:jibon jekhane jemon pdf

Back to top button
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker