iba Job Solution Pdf Download 2021

বইয়ের নাম: আইবিএ জব সলিউশন ২০২১ pdf ডাউনলোড করুন: Iba Job Solution 2021 Pdf free Download link: Click here
আরও পড়ুুন:-
বই: অনলি লাভ
মূলঃ এরিক সেগাল
অনুবাদঃ বদরুল মিল্লাত
নতুন প্রচ্ছদে নতুন সংস্করণ
“অনলি লাভ” নামটি শুনলে মনে হয়ে এটা একটি রোমান্টিক উপন্যাস। কিন্তু এই বইটিতে প্রেম বা ভালোবাসা এসেছে অন্য আর দশটা গল্পের মতোই। এখানে মূল বিষয়টা হলো দুজন ডাক্তারের মানবিকতা। পৃথিবীর আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত দুর্গম আফ্রিকার যুদ্ধবিদ্ধস্ত একটি দেশে ফ্রান্সের “মেডেসিন ইন্টারন্যাশনাল” (medicine sans frontières) নামের একটি চিকিৎসা সেবা সংগঠনের কাজ, যুদ্ধের ভয়াবহতা, তাতে নিরীহ মানুষগুলোর দুর্গতি এসবের মাঝেও প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে আমেরিকান ডাক্তার ম্যাথিউ ও ইটালিয়ান ডাক্তার সিলভিয়া প্রেমে পড়ে। অসাধারণ একটি উপন্যাস পড়তে চাইলে আন্তর্জাতিক বেস্টসেলর এরিক সেগালের এই বইটি অবশ্যই পড়ে দেখার আমন্ত্রণ রইল।
নিচে বইটির দুটি অংশ তুলে ধরলাম। প্রথম অংশে ম্যাথিউ ও সিলভিয়া আফ্রিকা যাওয়ার আগে প্রশিক্ষণের সময় প্যারিসে তাদের নিজেদের ডাক্তার হওয়ার প্রেক্ষাপটটা বর্ণনা করে, আর দ্বিতীয় অংশে আফ্রিকায় যাওয়ার পর এত একাগ্রতা, প্রচেষ্টা থাকা সত্বেও সীমিত সুবিধার কারণে চিকিৎসা প্রদানে একজন ডাক্তারের অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে!
————————-
dhaka university iba question bank pdf download
(১)
ম্যাথিউ আর সিলভিয়া প্রতিদিনের মতোই হোটেলে ফেরার আগে প্যারিসের সিয়েন নদীর পাড়ে বসে গল্প করছে। ম্যাথিউ বলছে,
“সেই বছরের সামার ভ্যাকেশানটা ছিল আমার অগ্নিপরীক্ষার সময়। কারণ মিউজিক আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে কিন্তু আমি চাই ডাক্তার হতে, মানবতার সেবায় কিছু একটা করতে। আমাকে আমার মেজর বিষয়টা দ্রুতই ঠিক করে ফেলতে হবে। কিন্তু আমি প্রচণ্ড দ্বিধায় পড়ে গেলাম। মিউজিক নাকি মেডিসিন!
ইভি (ম্যাথিউর ক্লাসমেট)ও আমাকে এব্যাপারে কোনো সাহায্য করতে পারল না। আমার কাউন্সেলর, প্রফেসররাও যথেষ্ট আন্তরিকভাবে আমাকে উপদেশ দিলেন, ‘তোমার মন যেটা চায় সেটাই বেছে নাও’। কিন্তু আমার মনটা যেন দুটোর জন্যই একইভাবে টানছিল।
এসময় ইভি কোলারেডোর এসপেন ফেস্টিভ্যালে তার বন্ধু রজার জোসেফসনের সাথে একটা কনসার্টে চ্যালো বাজাতে চলে গেলে আমি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে যে কোন প্রকার সাধারণ কাজ করে কিছু উপার্জনের জন্য কাজে লেগে পড়লাম।
আমার মনে আছে, একদিন রাতে শিশুদের ওয়ার্ডে ডিউটির সময় আমার মনে হলো একজন অচেতন শিশু যেন ব্যথায় কাতরাচ্ছে। আমি নার্সদেরকে বিষয়টা জানাতে তারা বলল যে, তাকে তীব্র ঘুমের ওষুধ দেয়া হয়েছে, তাই তার ব্যথায় কাতরানোর কোনো কারণ নেই।
তবুও আমার ডিউটির শেষে আমি মেয়েটার কাছে এগিয়ে গেলাম, তার পাশে বসে আমি তার একটা হাত আমার হাতে তুলে নিলাম। সে সাথে সাথেই একেবারে চুপ হয়ে গেল। আমি ভোরের আলো না ফোটা পর্যন্ত তার হাতটি ধরেই পাশে বসে রইলাম। মেয়েটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিল যে, আমি সারাটাক্ষণই তার পাশে ছিলাম, কারণ সে যখন জেগে উঠল, আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বলল, ‘আপনাকে ধন্যবাদ, ডক্টর।’
আমি সাথে সাথেই ইভিকে কল করলাম এবং তাকে জানালাম যে, আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি!
আমি কী বিষয় নির্বাচন করেছি সেটা না জেনেই সে বলল, ‘শুনে আমি সত্যি খুবই খুশি হয়েছি, ম্যাথিউ।’
‘কেন খুশি হয়েছো, আমি মেডিসিনে পড়তে যাচ্ছি সেটা ভেবে?’
‘না,’ সে কোমলভাবে বলল। ‘তুমি তোমার জন্য যেটা ভাল, সেটাই বেছে নিয়েছো এবং সেজন্যই আমি খুশি হয়েছি।’
আমিও ঠিক একই কারণে খুব প্রফুল্লবোধ করতে লাগলাম। আমি হাসপাতালের বাইরে এসে খোলা হাওয়ায় আনন্দে যেন ভেসে বেড়াতে লাগলাম।
আমি ডাক্তার হতে চলেছি!
———————————
‘সত্যি বলতে,’ সিলভিয়া তার ডাক্তার হওয়ার গল্প শুরু করল, ‘আমার এমন কোনো সময় মনে পড়ে না, যখন আমি ডাক্তার হতে আগ্রহী ছিলাম না। আমার ধারণা সেটা শুরু হয়েছিল জর্জিওর সময় থেকে।’
‘সে কে?’
গভীর আবেগের কোনো কথা বলার সময় সবসময়ের মতোই সে সামনে ঝুঁকে এল। সে জর্জিও রিযুটো’র ব্যাপারে তার গল্প শুরু করলঃ
“সে ছিল আমার প্রথম প্রেমিক। আমরা দু’জনেই সাত বছরের ছিলাম। সে বেশ হালকা গড়নের ছিল, আমাদের প্রায় সবার চেয়েই তাকে অনেক ছোট দেখাত। ক্লাসের বিরতির সময় অন্যান্য ছেলেরা যখন দৌড়ে বেড়াত সে একজায়গায় চুপ করে বসে থাকত। আমি সাধারণত তার পাশে গিয়ে বসে তাকে সঙ্গ দিতাম। কিন্তু কোনোদিনই স্কুলের পরে খেলার জন্য আমাদের বাড়িতে সে আসতে পারত না। কারণ প্রতিদিন স্কুল শেষে তাকে ডায়ালাইসিস করানোর জন্য হাসপাতালে যেতে হতো।
সে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস নিল।
‘দুত্তোরী! এতদিন পরেও এ বিষয়ে কথা বলতে আমার কেন যে এমন লাগে!’ বলে সে তার চোখের কোনাগুলো মুছল। ‘আসলে তার জীবনের খুব একটা সময় বাকি ছিল না…,‘ তার গলাটা ধরে এল। ‘আমার বাবা তার পরিবারকে তার একটা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ দিতে চাইলেন। আমি খুবই খুশি হলাম, বাবার জন্য গর্ববোধ করলাম। আমার ধারণা ছিল যে, বাবা কখনো কিছুতেই ব্যর্থ হন না।’
সে কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর আবার বলল, ‘বোস্টন জেনারেল হাসপাতালে জর্জিওর অপারেশান করা হলো, কিন্তু তার ঘুম আর ভাঙ্গল না।’ সিলভিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে হাতের পিঠ দিয়ে আবার তার চোখ মুছল।
মাথাটা নিচু রেখেই সিলভিয়া বলতে থাকল, ‘আমার বাবাকে সেই কষ্টটা তখন থেকেই তাড়িয়ে বেড়ায়, কিন্তু জর্জিওর মা, মিসেস রিযুটোর কথাটা ভেবে দেখ! আমরা যদি তাদের পারিবারিক জীবনে অনুপ্রবেশ না করতাম, তার ছেলেটা হয়তো আরও ছয়মাস বা একবছর বেঁচে থাকত! ব্যাপারটা এমন যে, মেডিক্যাল সাইন্স শুধুমাত্র তার জীবনের সমাপ্তিটাকে ত্বরান্বিত করেছে!’
সিলভিয়া শেষ করলেও আমি কিছু সময় চুপ করে থেকে বললাম, ‘তো তুমি ডাক্তার হওয়ার চিন্তা শুরু করলে।’
‘সচেতনভাবে হয়তো নয়, কিন্তু আমার মনে নিশ্চয়ই এই কষ্টটা রয়ে গিয়েছিল। যাইহোক, এর কয়েক বছর পরে আমি যখন ইংল্যান্ডের স্কুলে পড়ছি, তখন সারাহ (সিলভিয়ার ক্লাসমেট ও বেস্টফ্রেন্ড) এর বাবা, জন কনরাড, ক্যামব্রিজের একজন প্রফেসর, একটা হাসপাতালের অন্তীম পর্যায়ে থাকা রোগীদের শাখার ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ছিলেন। একদিন তিনি তার সকালের ভিজিটিং ট্যুরের সময় আমাদের দু’জনকে সাথে নিয়ে গেলেন।
‘তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। তিনি যখন একজন রোগীর সাথে থাকতেন, তিনি তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসাবে ভাবতে বাধ্য করতেন। তিনি প্রত্যেকের কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনতেন, মজার মজার কথা বলতেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে তিনি তাকে সাহস দেয়ার জন্য একেবারে সঠিক কথাটা শোনাতেন।
‘আট বছরের একটা ছোট বালক ছিল। যদিও সে খুবই দুর্বল ছিল, ডাক্তারের কৌতুক শুনে সে কিছুটা হাসতে পারত। হঠাৎ করেই আমার মনে হলো, জর্জিও যদি এরকম একটা মানবিক এবং যত্নশীল পরিবেশে মরতে পারত!
সেইদিন ফেরার পথেই আমি আমার মনস্থীর করে ফেললাম।’
—————————————-
(২)
এটা কোন সাধারণ একটা দিন ছিল না।
গেরিলা ফাইটারদের গুলির ক্ষতের চিকিৎসা করা ছাড়াও আমি এত সংখ্যক রোগীর রোগ নির্ণয় করেছি আর চিকিৎসা দিয়েছি যা আমি গুণেও শেষ করতে পারব না। এই সময়ে আমরা যদি এখানে না থাকতাম, এদের অনেকেই মারা যেত!
তাছাড়া, আমাদের হঠাৎ করে চলে আসার কারণে চোখের সংক্রামক রোগ ট্রাকোমায় আক্রান্ত অন্তত ডজন সংখ্যক বাচ্চার অন্ধত্ব দূর করা সম্ভব হয়েছে। চোখের ভেতরে অলক্ষে হয়ে ওঠা এই ইনফেকশান এত মারাত্বক হয়ে ওঠার কারণ স্বাস্থবিধি বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অনুপস্থিতি, যা তাদের দৃষ্টি নষ্ট করে দিতে পারত। কিন্তু সময়মত কয়েক ফোঁটা ডোক্সিসিলিন (কী সহজ! কে ভাবতে পারে এন্টিবায়োটিক ছাড়া জীবন?) রোগটিকে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করে তোলে।
আমি শেষ ট্রাকোমার কেসটার কথা আমার জীবনেও ভুলব না।
সে একজন ছোট বাচ্চা ছেলে, নাম দাওইত। যে তার অনেক অনেক ঘন্টার অপেক্ষার সময়ে দুই একটা ইংরেজি শব্দ শিখে ফেলেছে। সে আমাকে “ডোক্টা” ডাকতে পেরে খুবই খুশি, বিভিন্ন সুরে, বিভিন্নভাবে ডাকে আর হেসে গড়িয়ে পড়ে। তার অবস্থা খুবই মারাত্মক পর্যায়ের কিন্তু তার কর্ণিয়া বা কনজাঙ্কটিভাতে তখনো কোন ক্ষত বা দাগ পড়েনি। ডক্সি’র এক কোর্স ঔষধেই কোনো স্থায়ী ক্ষতি করা ছাড়া তার রোগটিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা সম্ভব।
কিন্তু আমাদের হাতে আর একটিও ডক্সিসিলিন ছিল না! আমি আমার নার্স আইদাকে দিয়ে ছেলেটির মা’কে অনুরোধ করালাম যেন ওকে নিয়ে তিনি কাল আবার আসেন।
পরদিন সেই মা বা ছেলেটিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না।
আমরাও খুঁজে আর একটিও ডক্সিসিলিনের টিউব পেলাম না। পরবর্তিতে যখন আমরা ঔষধটা সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম এবং আমি এরপরে অবশিষ্ট যতদিন আফ্রিকাতে ছিলাম, আমি ছেলেটিকে খুঁজে বেড়িয়েছি, তার দৃষ্টিশক্তিকে রক্ষা করার জন্য। আমি তাকে আর কখনোই খুঁজে পাইনি।
আমার মনে হয়, সেরা ডাক্তার তারাই, যারা তাদের সফলতার চেয়ে অসফলতাগুলোকেই বেশি মনে রাখেন। এটা তাদেরকে প্রয়োজনীয় মানবিকতা দেয়। সেজন্যই যখনই আমার ইরিত্রিয়ার কথাগুলো মনে হয়, আমি তাদের কথা ভাবি যাদেরকে আমি রক্ষা করতে পারিনি।
আমি ভাবি ছোট্ট দাওইতের কথা।
আর সিলভিয়ার কথা!
iba question bank pdf লাগলে জানাতে ভুলবেন না।