গ্রাফিক্স ডিজাইন ও টাইপোগ্রাফি কি? বিস্তারিত আলোচনা
জানেন কি গ্রাফিক ডিজাইন কি?
গ্রাফিক ডিজাইন হ’ল টাইপোগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, আইকনোগ্রাফি এবং চিত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল যোগাযোগের প্রক্রিয়া। ক্ষেত্রটি ভিজ্যুয়াল যোগাযোগ এবং যোগাযোগের ডিজাইনের একটি উপসেট হিসাবে বিবেচিত হয় তবে কখনও কখনও “গ্রাফিক ডিজাইন” শব্দটি সমার্থক শব্দ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। গ্রাফিক ডিজাইনারগুলি ধারণাগুলি এবং বার্তাগুলির ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা তৈরি করতে প্রতীক, চিত্র এবং পাঠ্য তৈরি এবং একত্রিত করে।
ভিজ্যুয়াল রচনাগুলি তৈরি করতে টাইপোগ্রাফি, ভিজ্যুয়াল আর্টস এবং পৃষ্ঠা বিন্যাস কৌশল ব্যবহার করে। গ্রাফিক ডিজাইনের সাধারণ প্রয়োগগুলির মধ্যে কর্পোরেট ডিজাইন (লোগো এবং ব্র্যান্ডিং), সম্পাদকীয় নকশা (ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র এবং বই), ওয়েফাইন্ডিং বা পরিবেশগত নকশা, বিজ্ঞাপন, ওয়েব ডিজাইন, যোগাযোগ নকশা, পণ্য প্যাকেজিং এবং স্বাক্ষর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গ্রাফিক শব্দটির অর্থ ড্রইং বা রেখা। গ্রাফিক শব্দটি সেই সব চিত্রগুলোকে বুঝায় যে চিত্রগুলোর সফল পরিসমাপ্তি ড্রইং এর উপর নির্ভরশীল। গ্রাফিক শব্দটি আলাদা ভাবে বোঝার পর বুঝতে হবে ডিজাইন শব্দটির অর্থ। ডিজাইন শব্দটির অর্থ পরিকল্পনা বা নকশা।
গ্রাফিক ডিজাইন এর শুরুতে যা জানতে হবে: বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইন বলতে আমরা সেই সব চিত্র কর্মকে বুঝি যা পরবর্তীতে মূলত: ছাপার জন্য তৈরি হয়ে থাকে। তবে প্রযুক্তির প্রয়োজনে গ্রাফিক ডিজাইন শুধুমাত্র ছাপার গন্ডি পেরিয়ে বহুদূর চলে যাচ্ছে। গ্রাফিক ডিজাইন এর একান্তই অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলি হচ্ছে – ডিজিটাল সাইন, ক্যালেন্ডার, টাইপোগ্রাফি, ব্রোশিয়োর, ওয়েব সাইট ডিজাইন ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরো একটা শব্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ডেস্কটপ পাবলিশিং। একটি কথা মনে রাখতে হবে ডেস্কটপ পাবলিশিং এবং গ্রাফিক ডিজাইন হাতে হাত রেখে চলে। সংক্ষেপে যদি বলি, ডেস্কটপ পাবলিশিং হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে মুদ্রণ, ওয়েব, পুস্তিকা, বই, ব্যবসায়ীক কার্ড, ওয়েব পেজ হিসাবে মোবাইল ডিভাইসের জন্য ফরম্যাট,নথি উত্পাদন, গ্রিটিং কার্ড, ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
লক্ষণীয়:
*গ্রাফিক ডিজাইন একটি সৃষ্টিশীল যার শিল্প পূর্ব শর্ত দৃষ্টি নন্দন হওয়া।
*মাথায় রাখতে হবে Final Output কি? Print না Video? শুরুতেই নির্ধারণ করে নিতে হবে-কি করবো? কাদের জন্য করবো? কিভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়?কালার কম্বিনেশন। ইত্যাদি
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?
আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে গ্রাফিক্স ডিজাইন আসলে কি! আচ্ছা তার আগে আমাকে বলুন এমন কিছু কি আছে যাতে গ্রাফিক্স ডিজাইন নেই?! সব কিছুতে ডিজাইন আছে, পৃথিবী-পৃথিবীর বাইরে সব কিছুতেই একটা ডিজাইন আছে। তা প্রাকৃতিকভাবে হোক বা কৃতিমভাবে। আপনি হয়ত তা দেখার চেষ্টা করছেন না বা খেয়াল করছেন না। একটু খুজে দেখুন কোন) জিনিসটায় ডিজাইন নেই!
এবার আসুন সংজ্ঞায় দেয়ার চেষ্টা করি…নিজের মত করে সংজ্ঞা দিচ্ছি, আসলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের সংজ্ঞা এক কথায় দেওয়া সম্ভব নয়..তারপরও চেষ্টা করছি..
” যা কিছু ডিজাইনড সবই গ্রাফিক্স ডিজাইন ”
”একটি ক্রিয়েটিভ প্রসেস যা আর্ট এবং টেকনোলজী এর সমন্বয়ে আইডিয়াগুলো প্রকাশ করে তাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন বলে” (আমি আর্ট ও টেকনোলজী …আমার নিজের থেকেও বেশি পছন্দ করি)
বিখ্যাত ডিজাইনার Neville Brody এর মতে”ডিজাইন প্রয়োজনসমূহ, তথ্য এবং কালারের এমন একটি সংশ্লেষন যা এর অংশসমূহের সমষ্টির থেকেও বেশি কিছু তৈরি করে” (তার এই সংজ্ঞার জন্য কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরুষ্কারও পাইছেন…আমি বাংলায় হয়তো ঠিক ভাবটা প্রকাশ করতে পারিনি তবে তিনি এই সংজ্ঞায় অনেক কিছু বোঝাতে চেষ্টা করেছেন)
উপরের সংজ্ঞাগুলো বিশ্লেষন করলে যা পাই তা হল… গ্রাফিক্স ডিজাইন এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে আপনার মনের ভাব, কিছু প্রয়োজন, তথ্য ও কালারের সমন্বয়ে আর্ট ও টেকনোলজীর সাহায্যে উপস্থাপন করতে পারবেন।
উপরের সংজ্ঞাগুলোয় আসলে টেকনিক্যাল দিকগুলো ফুটে ওঠে যা হয়তো কারো কারো কাছে বুঝতে কঠিন হতে পার…
আরওএকটু সহজ করে দিই..Nothing is better than example…
আপনি হয়তো লোগো ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইন, ইন্টেরিওর-এক্সটেরিওর ডিজাইনের কথা শুনে থাকবেন
একটা লোগোতে একটা কোম্পানীর বিষয়বস্তু/নাম/বর্ননা/কাজ ইত্যাদি ডিজাইনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়একটা বিজনেস কার্ডে ডিজাইনের মাধ্যমে একজন বিজনেসম্যান এর বিভিন্ন তথ্যগুলো দেওয়া হয়একটা ইন্টেরিওর বা এক্সটেরিওর ডিজাইনে একটা বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের ডিজাইন করা হয়
এরকম উদাহরন আরও দেয়া যায়..আস্তে আস্তে পাবেন এগুলো সবই গ্রাফিক্স ডিজাইন।
#graphic design
টাইপোগ্রাফি হল টাইপ মানে অক্ষর নিয়ে সাজানোর কলা ও কৌশল | বিভিন্ন ধরণের অক্ষর কে নানা পদ্ধতিতে সাজানো কে ই বলে টাইপোগ্রাফি
যেমন ধরুন আপনার নিজের নামটাকে সোজা ভাবে না লিখে প্রথম অক্ষর টা একটু বড় করে লিখলেন, কিংবা প্রথম অক্ষর টার রং অন্যদের থেকে আলাদা করে দিলেন , এই কৌশল গুলোকেই একত্রে টাইপোগ্রাফি বলা হয়|
আধুনিক যুগের টাইপোগ্রাফির বৃত্ত টা অনেক বড় যেমন :
১. টাইপ ডিজাইনিং ( এগুলোকে আর বাংলা অনুবাদ করলাম না …চলতি ইংলিশ শব্দ গুলো কম্পিউটার এর ভাষায় বুঝতে সুবিধা হবে ) – যেকোন রকমের অক্ষর সাজানো
২. ক্যালিগ্রাফি – অক্ষর চিত্র , এটি প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে , এই পদ্ধতির জন্য দরকার হয় বিশেষ ধরণের তুলি ও কলম | বিশেষ করে চীন ও আরবিক দেশে বহুল প্রচলিত |
৩. গ্রাফিটি – পশ্চিমী আর্ট , এর কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই , কোনো মিডিয়াম ও নেই… যেভাবে খুশি দুমড়ে মুচড়ে শব্দ কে লেখা যায় | এটি পপ কালচারের এক টি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ |
৪.পোস্টার ডিজাইন – সিনেমার পোস্টার ডিজাইনে যে ধরণের ফন্ট নেওয়া হয় বা ব্যবহার করা হয় |
৫. টাইটেল অনিমেসান – সিনেমার প্রথমে বা শেষে কলাকুশলী দের নাম দেখানোর জন্য এই ধরণের টাইপোগ্রাফিব্যবহার করা হয় |
৬. লোগো ডিজাইনিং – যেকোন ধরণের লোগো বা প্রতিক বানানোর জন্য টাইপোগ্রাফি দরকার হয় |