স্বামী স্ত্রী একসাথে নামাজ পড়ার নিয়ম
স্বামী স্ত্রী একসাথে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম – স্বামী স্ত্রী জামাতে নামাজ পড়লে ইকামত কে দিবে – স্বামী স্ত্রী একসাথে নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিন:
জিজ্ঞাসা–৯৪২: স্বামী-স্ত্রী একসাথে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে সূরা কি জোরে না আস্তে পড়বে? –কামরুল হাসান।
জবাব: স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নফল নামাজ জামাতে পড়া নিষেধ নয়। তবে স্ত্রী স্বামীর বরাবর হয়ে দাঁড়াবে না বরং একটু পিছনে দাঁড়াবে।
আর রাতের নফল নামাযে অন্তত এই পরিমাণ উচ্চস্বরে পড়া উত্তম, যাতে নিজে স্পষ্ট শুনতে পায়। হাসান বসরী রহ. বলেন,صَلَاةُ النَّهَارِ عَجْمَاءُ، وَصَلَاةُ اللَّيْلِ تُسْمِعُ أُذُنَيْكَ দিনের নামায নিম্নস্বরের এবং রাতের নামায তোমার কানকে শুনাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৩৬৬৪)
সুতরাং মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য আপনি রাতের তাহাজ্জুদ/বিতিরে উচ্চস্বরে কেরাত পড়তে পারেন। বরং এটাই উত্তম।
প্রশ্ন: শোনা যায় , বিয়ের কিছু বছর পর থেকে স্বামী-স্ত্রী কিছুটা একই দেখতে লাগে. কারণ কী ?
উত্তর:
১৯৮৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ের উপর একটি গবেষণাও চালিয়েছিলেন। সে গবেষণার মাধ্যমে তারা যে ফল পেয়েছিলেন, তা হলো: বছরের পর বছর একসাথে থাকার সুবাদে একজন নারী ও একজন পুরুষ নিজেদের ভিতর বিভিন্ন ধরনের আবেগ ভাগাভাগি করে নেয়, যার ফলে তাদের মুখের দাগ থেকে শুরু করে অভিব্যক্তি, সব কিছুতেই পারস্পরিক সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।
এ গবেষণায় আমেরিকান সামাজিক মনোবিদ রবার্ট জানজঙ্ক বিভিন্ন দম্পতির বিয়ের দিনের ছবি এবং ২৫ বছর একসাথে কাটানোর পরের ছবি তুলনা করে দেখান, বিয়ের দিন স্বামী ও স্ত্রীর মুখে যদি কোনো মিল না-ও থাকে, ২৫ বছর পর আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মুখে বিভিন্ন মিল ধরা পড়ে। এ গবেষণার মাধ্যমে তিনি আরো চমকপ্রদ একটি তথ্য বের করেছিলেন: একটি দম্পতির মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক যত বেশি মধুর ও সুখের হয়, তাদের মধ্যকার সাদৃশ্যের সম্ভাবনাও তত বেশি বেড়ে যায়।
স্বামী ও স্ত্রীর দেখতে অনেকটাই একই রকম হয়ে যাওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো তাদের নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়া। একসাথে জীবন কাটাতে গিয়ে একটি দম্পতি একাধারে যেমন অজস্র সুখের মুহূর্তের সম্মুখীন হয়, তেমনই একসাথে তাদেরকে প্রচুর বেদনাবিভুর সময়েরও মোকাবেলা করতে হয়। এভাবে পারস্পরিক সান্নিধ্যে তারা যেসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়, তা তাদের শরীরী ভাষা ও মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে। ওই যে কথায় আছে না, মানুষের জীবন ইতিহাস লেখা থাকে তার মুখে। এজন্যই হয়তো একই রকম জীবন কাটানো দুজন মানুষের মুখে একই ধরনের ইতিহাস রচিত হয়, আর তাই তাদের মুখাবয়ব ক্রমশ অভিন্ন হয়ে ওঠে।
https://assets.roar.media/assets/2drPGUFCteTdmSqH_o-benedict-cumberbatch-sophie-hunter-facebook.jpg
অভিন্ন জীবনাচরণ সাদৃশ্যপূর্ণ চেহারা সৃষ্টির কারণ; Image Source: Getty Images
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো মানুষের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার ধরন, যেমন- খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা প্রভৃতির প্রতিফলন ঘটে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, সাধারণত কোনো বিবাহিত দম্পতির জীবনযাত্রা একই রকম হওয়ার ফলে, তাদের ইমিউন সিস্টেমও একই রকম হয়ে যায়, যা প্রভাব ফেলে তাদের সমগ্র শরীরে।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শুরুতে একই রকম জীবনযাত্রার ফলে স্বামী-স্ত্রীর ইমিউন সিস্টেমও অভিন্ন হয়ে যায়, আর পরবর্তীতে অভিন্ন ইমিউন সিস্টেমের কারণেই তারা একই রকম জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয়।
https://assets.roar.media/assets/2drPGUFCteTdmSqH_o-benedict-cumberbatch-sophie-hunter-facebook.jpg
সুখী দাম্পত্য জীবন স্বামী-স্ত্রীর চেহারায় ছাপ ফেলে; Image Source: Getty Images
২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, একে অন্যকে অনুকরণের প্রচেষ্টা স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাত্রা একই রকম হয়ে ওঠায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যেমন: কোনো দম্পতি হয়তো ইতিপূর্বে খুব একটা স্বাস্থ্য সচেতন ছিল না। কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো একজন যদি হঠাৎ করে সকালবেলা হাঁটার অভ্যাস করে, তাহলে তার দেখাদেখি তার সঙ্গীরও সকালবেলা হাঁটতে বেরোনোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। একইভাবে কোনো ধূমপায়ী দম্পতির মধ্যে একজন যদি ধূমপান ছেড়ে দেয়, তবে অন্যজনেরও ধূমপান ছাড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।